‘জেগে আছো?’

আধশোয়া অবস্থায় বেশ মনোযোগ দিয়ে একটা বই পড়ছি। বইয়ের নাম-”Courage to be Disliked” সেলফ হেল্প জেনারের বই। বেশিরভাগ মানুষ সেলফ হেল্প বই পছন্দ করে না। সম্ভবত তারা জানে কীভাবে নিজেকে সাহায্য করতে হয়। আমি যেহেতু জানিনা, এবং বিপদে পড়লে কোনো কূল কিনারা খুঁজে পাইনা, আমার ভরসা সেলফ হেল্প বই।

‘জেগে আছো’—মেসেজের নোটিফিকেশনে আমার মনোযোগ নষ্ট হলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত বাজে ১ টা ৩৭। জরুরি কাজ ছাড়া রাত দশটার পর যেকোনো টেক্সটই বিরক্তিকর। ‘জেগে আছো?’ কোনো জরুরি বার্তা হতে পারে না। হোয়াট ইফ আমি জেগে নেই? বা আমি জেগে থেকেও উত্তর দিতে আগ্রহী না?

যতটুকু বিরক্ত হওয়ার কথা, তার চেয়েও সম্ভবত বেশি বিরক্ত হলাম সেন্ডারকে দেখে। এটা ঠিক বিশুদ্ধ বিরক্তির অনুভূতি না। বিরক্তির সাথে দুই চামচ নার্ভাসনেস, আড়াই চামচ রিপালশান মিশিয়ে একটা মনস্তাত্ত্বিক খিচুড়ি ধরনের ফিলিং। সেন্ডার আমার হাজব্যান্ড। অশোক। আমরা সেপারেশনে আছি প্রায় ৬ মাস ধরে। এই ছয় মাস আমাদের ট্রায়াল পিরিয়ড ছিলো। যদি আমরা একে অপরের শূন্যতা অনুভব করতাম, কিংবা পিছুটান বোধ হতো, হয়তো আমরা সংসারে ফেরত যেতাম। এমন কিছু হয়নি যেহেতু, কিছুদিনের ভেতরই আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে। সেই হিসেবে উড বি ওয়াইফ কিংবা হাজব্যান্ডের মতো অশোক কে ‘উড বি এক্স হাজব্যান্ড’ বলা যায়।

অশোকের সাথে আমার পরিচয় তিন বছর আগে। পরিচয়ের খুব অল্পকয়দিনের ভেতর আমরা বিয়ে করি। বিয়ের আগে এবং পরে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, আমাদের পরিচয়টা কীভাবে হলো। এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় আমাকে খুব সাবধান থাকতে হয়েছে। আত্মীয়স্বজনের কাছে লাজুক মুখ করে উত্তর দিয়েছি, আমরা মিউচুয়াল ফ্রেন্ড। এক বান্ধবীর বিয়েতে গিয়ে পরিচয় হয়েছে। একই প্রশ্নের উত্তরে ফ্রেন্ডদেরকে বলেছি, আমার কাজিনের বেস্টফ্রেন্ডের ভাই। ছোটোবেলা থেকেই একটু আধটু চিনি। একসাথে ক্যারাম খেলেছি কয়েকবার। যা হাসাতে পারেনা…একদম পেট ব্যথা হয়ে যাবে তোদের..!

এখানে আমি কিছু মিথ্যা কথা বলি। এই মিথ্যা গুলো অপ্রয়োজনীয়। না বললেও হয়। তবুও কেনো বলি—জানিনা। অশোকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে hi5 নামের একটি সস্তা ডেটিং কাম ফ্লার্টিং সাইটে। এখানে নির্দিষ্ট এলাকায়, নির্দিষ্ট বয়সের মানুষ খোঁজা যায়। আমার প্রেফারেন্স ছিলো ২৫-৩০ এর ভেতর। আমি যেহেতু হোমো কিংবা বাইসেক্সুয়াল নই, ছেলেদের সাথে পরিচিত হবার জন্যই সেখানে যেতাম। এসব সাইটে ভালোবাসার উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষ যায় না। কিছু সময় কাটানো, ক্যাজুয়াল কফি ডেট কিংবা বিছানায় যাওয়া পর্যন্ত হতে পারে। এর বাইরে ভালোবাসা হয়ে গেলে—সেটা বোনাস। আর বিয়ে হলে তো বোনাসের উপর বোনাস। সুতরাং, আমি এবং অশোক—দুজনই গর্বের সাথে ডাবল বোনাস পেয়েছিলাম।

.

এই পর্যায়ে এসে নিজের অল্প একটু বর্ণনা দেওয়া জরুরি।

মেয়েরা সাধারণত কেমন হয়? সমরেশ মজুমদার বলেন, মেয়েরা কেমন হয়—এই প্রশ্নের উত্তর—মেয়েরা যেমন হয়। এরচেয়ে সহজ এবং একইসাথে জটিল উত্তর এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি।

আমার নাম নাতালিয়া। নাম শুনে বেশিরভাগ মানুষ ভ্রু কুঁচকে তাকায়। চাকরির ইন্টারভ্যুগুলোতে প্রথম পাঁচ মিনিট কেটে যেতো নামের পেছনে। এটা একদিকে অবশ্য সুবিধাই ছিলো। তবুও।

দেশী মেয়ের বিদেশী নাম আদিখ্যেতা ছাড়া আর কী?

এর পুরো দোষ (!) দেই আমার বাবাকে। নাতালিয়া অর্থ —ক্রিসমাস ডে। আশা করছি আপনারা আমার জন্মদিন এবং এই নাম রাখার কারণ সম্পর্কে ইতিমধ্যে জেনে গেছেন।

সৌন্দর্যের ভিত্তিতে গ্রেডিং করা হলে আমার গ্রেড হবে ‘সি’ অথবা ‘ডি’। ডিএসএলআরে তোলা আমার নির্দিষ্ট কিছু ছবি আছে। কোথাও আমি নীল শাড়ি সাদা ব্লাউজ পড়ে ইনানী বীচে দাঁড়িয়ে আছি, কোথাও সোয়েট শার্ট পড়ে উষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছি দূরে, আবার কোথাও চোখ বন্ধ করে চুল ঠিক করার মতো একটা ভাব ধরেছি। কোনোটাই আসল আমি নই। ছবি আর আসল চেহারায় বিস্তর ফারাক। ঘুরে ফিরে সবসময় তাই এই ছবিগুলোই ব্যবহার করি। চিনতে অসুবিধা হলেও নিজেকে তখন ‘এ’ গ্রেড মনে হয়। একধরনের আত্মতুষ্টিতে ভুগি৷

চরিত্রের ভিত্তিতে গ্রেডিং করা হলে সম্ভবত আরও পিছিয়ে থাকবো৷ ‘ই’ কিংবা ‘এফ’। এই দুরাবস্থার জন্য দায়ী আমার স্ববিরোধী মন। এর উপর আমার নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। আমার মনের অবস্থা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মতো। সবসময় সংঘর্ষ এবং দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। সমাজে আমার বিশেষ কিছু বদনাম আছে৷ এ ধরনের বদনাম সাধারণত পুরুষদের জন্য মানানসই। একজন মধ্যবয়সী নারী হয়েও কীভাবে আমার ভেতর জিনিসটা ঢুকে গেলো —খেয়াল করিনি।

অশোকের পরিবর্তে আমার বিয়ে করার কথা ছিলো মাহমুদকে। বেশ কয়েক বছরের প্রেম ছিলো আমাদের। সমস্যা হচ্ছে,মাহমুদের নারী সম্পর্কে ধারণা কিছুটা এরিস্টটলীয়। এরিস্টটল মনে করতেন, নারীরা হলো ডিফেক্টিভ মেইল, মানে অসম্পূর্ণ পুরুষ। গ্রীক সমাজে তখন প্রচলিত ছিল, যে নারী কম দেখে, কম বুঝে, কম জানে এবং ঘরের বাইরে কম বের হয় তারাই হলো উত্তম নারী। এই সমাজে থেকেও মাহমুদ কেন গ্রীক সমাজের মতো ভাবতো কে জানে। ব্যাপারটা মেনে নেওয়া আমার জন্য খুব সহজ ছিলো না। এরপরই আমি আসন পেতে বসি হাইফাইভে।

 

মাহমুদের পর জীবনে আরও অনেক মাহমুদের আবির্ভাব হয়। আমার বয়স বাড়ে, আনাগোনা করা মানুষের সংখ্যাও বাড়ে । রিলেশনশিপের একটা গ্রাফ করলে দেখা যাবে প্রথম কয়েকদিন,কয়েকমাস, কিংবা কয়েকবছর কাটে অস্বাভাবিক মিষ্টি। একসময় মিষ্টি ভাবটা চলে যায়। না তিতা, না মিষ্টি, না ঝাল—মানে স্বাদহীন অবস্থায় ঝুলতে থাকে। পানির মতো। খেলে কোনো অনুভূতি হয়না। ভালোবাসার প্রধান বৈশিষ্ট্য বিস্তার লাভ। যে ভালোবাসায় বিস্তার লাভ বন্ধ হয়ে যায়, সেখানে ভালোবাসার চেয়ে অন্যকিছু বেশি থাকে। কর্তব্য কিংবা অভ্যাস। আমার ঠিক জানা নেই । একসময় সেই প্রচ্ছন্ন তিতকুটে ভাব জেগে উঠে.. ধীরে ধীরে প্রকট হয়। আর আমি প্রতিবারের মতো সেখানে আগ্রহ হারাই।

অনেক চিন্তাভাবনা করে দেখলাম আমার সমস্যা হোলো —আমার চোখ। চোখ না বলে একে
ম্যাগনিফাইং গ্লাস বললে ভুল হবে না। অতি ছোট জিনিসকে স্ক্রুটিনাইজ করার (বদ)অভ্যাস আমার আগে থেকেই৷ প্রেমিকেরা কী চিন্তা করছে,কীভাবে খাচ্ছে, কী পারফিউম ব্যবহার করছে, কীভাবে হাত নাড়াচ্ছে,কীভাবে টাইয়ের নট বাঁধলো —সবকিছু আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি। আমাকে যদি বাজারের লিস্টের মতো একেকজনের সমস্যার লিস্ট তৈরি করতে দেওয়া হয়, বড়জোর এক মিনিট লাগবে সবগুলো লিখতে। অ্যাজ আ রেজাল্ট, যেটা হবার কথা সেটাই হয়। প্রতিবার আমি পালিয়ে আসি। অবশ্য এতে যে আমি কষ্ট পাই, ব্যাপারটা তেমন না।

 

আমার চোখে একজন আইডিয়াল পার্টনার কেমন—এমন প্রশ্নে কিছু ক্রাইটেরিয়া চোখে ভাসে। এগুলো নিতান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাই আর শেয়ার করতে গেলাম না। জানার আগ্রহ হলে বলবেন৷ কিন্তু সত্যি কথা হলো, অশোকের চেয়ে বেশি কেউ এই ক্রাইটেরিয়া ফিলাপ করতে পারেনি। সম্ভবত এ কারণেই পরিচয়ের তিন মাস পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেই আমরা। তিন মাস একজনকে মানুষকে চেনার জন্য খুব অল্প সময়। তাও একটা ডেটিং সাইট থেকে—! টোটালি আনএক্সেপ্টেবল।

বিয়ের ক’দিনের ভেতর আমি আবিষ্কার করি অশোক প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি কথা বলে। ২৪ ঘণ্টায় একজন পুরুষ এভারেজে যদি ৭০০০ শব্দ উচ্চারণ করে, অশোকের সংখ্যা হবে ৭০,০০০। আমার প্রচন্ড মাথাব্যথা হয়। দুই একবার ‘হ্যাঁ হুঁ’ করে বিরক্তমুখে সায় দেই। একজন মানুষের পক্ষে যতটুকু সম্ভব নির্লিপ্ত হওয়া যায়, ততটুকু হয়ে আমি আমার কাজে ব্যস্ত থাকি। একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। না থাক, আজ না। অন্যদিন..।

 

এক বছরের মাথায় বেশি কথা বলার পাশাপাশি আরও অনেকগুলো সমস্যা বের হয়ে আসে। কিছু সমস্যা ছোটো, ইগনোর করা যায় এমন। কিছু ভয়ংকর। কেউ কাউকে তখন ছাড় দেইনা। একটা অসহনীয় অবস্থায় ভুগছি আমরা দু’জনই। আমার কনস্ট্যান্ট কমপ্লেইনিং-এ অশোকও বিরক্ত। তবে এতটাও বিরক্ত নয় যে, ছেড়ে চলে যাবে।

আমি যখন তাকে ডিভোর্সের ব্যাপারটা জানাই, সে আকাশ থেকে পড়ে।

.

এখানে আমি আবারও একটা মিথ্যা কথা বলেছি। ছয় মাস ট্রায়ালের কিছুদিন আগেই  আমি একটা প্রেমে পড়েছি। অসম প্রেম। ভদ্রলোক আমার চেয়ে প্রায় আঠারো-বিশ বছরের বড়। বয়স ৪৫ এর আশেপাশে। কানের আশেপাশে চার পাঁচটা পাকা চুল উঁকি দিচ্ছে৷ এখনো বিয়ে করেননি। কেনো বিয়ে করেননি—এ ধরনের প্রশ্ন করে মানুষকে বিব্রত করার স্বভাব আমার নেই। আপাতত একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি পড়ান। তাঁর সাথে আমার পরিচয় হয়েছে বইমেলার শেষদিন, অন্যপ্রকাশের স্টলে। দু’জনই হুমায়ূন আহমেদের ‘বৃক্ষকথা’ বইটা খুঁজছিলাম। এক কপিই বাকি ছিলো। কি সিনেমাটিক ব্যাপার! বয়সে ছোটো (এবং সম্ভবত নারী) হওয়ায় ভদ্রতা করে তিনি আমাকে বইটা অফার করলেন। আমি পাল্টা ভদ্রতা ব্যাক করলাম না। চুপচাপ বই ব্যাগে ভরে ধন্যবাদসূচক এক কাপ চা খাওয়াতে চাইলাম৷

যেহেতু আমরা দু’জনই লোনার ছিলাম, আমাদের হাতে সেদিন অফুরন্ত সময় ছিলো। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লেকের পাড়ে অনেকক্ষণ বসে রইলাম। ভদ্রলোক বেশ স্মার্ট। বাঙালিদের মতো বাংলা এবং ব্রিটিশদের মতো ইংরেজি উচ্চারণ করেন। শরীর থেকে ধেঁয়ে আসে হালকা, তবু তীব্র পারফিউমের ঘ্রাণ। এই ঘ্রাণ তাকে আরও যুবক করে দেয়। তিনি লেকচার দেওয়ার ভঙ্গিতে কথা বললেও শুনতে একদম খারাপ লাগেনা। প্রথমদিন অনেকক্ষণ কথা হলো আমাদের। গুরুত্বপূর্ণ কোনো কথা না। দিনকাল কেমন যাচ্ছে, কী করা হচ্ছে, সাহিত্য পড়ি কি না, বাইরনকে কেমন লাগে ইত্যাদি।

সেদিন বাসায় ফেরার পর থেকে এক মুহুর্তের জন্য তার কথা মাথা থেকে বের করতে পারছিলাম না। দ্বিগুণ বয়সী একজন লোকের জন্য আমি সারারাত উত্তেজিত হয়ে রইলাম। এরপর আমরা আরও ৫-৬ বার দেখা করেছি। কখনো আমার উদ্যোগে, কখনো তার। কখনও কফিশপে, কখনো পাঠক সমাবেশে, কখনো ধানমন্ডি লেকে।মজার ব্যাপার হলো, প্রত্যেকবার তিনি স্যুটেড ব্যুটেড অবস্থায় ছিলেন৷ প্রচন্ড গরমে কীভাবে মানুষ এতো ফর্মাল জামাকাপড় পড়ে,এ নিয়ে বেশ কয়েকবার হাসাহাসি করেছি৷ তিনিও হেসেছেন আমার সাথে সাথে। প্রতিবার দেখা হওয়ার পর আমি আগেরবারের চেয়ে বেশি আকর্ষিত হয়েছি। ইচ্ছাকৃত ভুল করে কাছে ঘেঁষতে চেয়েছি। তার নরম মিষ্টি হাসিতে প্রশ্রয় ছিলো। মাঝে মাঝে আমার মনে হতো তিনি কেবল স্নেহ করতেন আমাকে। কি আশ্চর্য ব্যাপার। আমি প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি, তিনি স্নেহ করবেন কেনো?

.

আজ সোমবার। তার বাসায় আমার দাওয়াত। সন্ধ্যার দিকে যেতে বলেছেন। মোহাম্মদপুর সুচনা কম্যুনিটি সেন্টারের পেছনেই বাসা। বাসায় তিনি একাই থাকেন। বই পড়েন, সিনেমা দেখেন, সিগারেট খান.. মাঝে মাঝে আরও বেশিকিছু খান। এইতো জীবন। আজ আমার আসা উপলক্ষ্যে বিশেষ আয়োজনে জ্যাক ড্যানিয়েল আছে। সাথে অরেঞ্জ জ্যুস এবং শ্যুগার। আমাকে আগেই জানিয়েছেন।

আমি পড়ে এসেছি হালকা গোলাপী রঙের একটা অরগাঞ্জা শাড়ি। পাতলা ফিনফিনে শাড়ির ভেতর দিয়ে আমাকে অর্ধনগ্নের মতো দেখাচ্ছে। আমার যাওয়ার কথা সন্ধ্যায়। ঠিক করলাম সারপ্রাইজ দিয়ে আরও আগেই চলে যাবো। দুপুর ১২ টার দিকে দুটো কাচ্চি নিয়ে চলে গেলাম মোহাম্মদপুর। চারতলা বাসাটা খুঁজে পেতে একদমই কষ্ট হলো না৷ দরজার সামনেই বড় করে তার নাম লেখা। সেখানে কোনো পিপহোল নেই।

অনেকক্ষণ নক করার পর হুইলচেয়ারে বসা কেউ একজন দরজা খুললেন।

প্রচন্ড অবাক হয়ে দেখলাম হুইলচেয়ারে বসা লোকটি আমার পরিচিত। যিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি পড়ান, বাইরনের কবিতা পছন্দ করেন, এমনকি আমি যার সাথে মাতাল হবো বলে এসেছি— তিনিই সে। পার্থক্য শুধু হুইলচেয়ারে। আমাকে দেখে তিনি প্রচন্ড বিব্রত হলেন। উজ্জ্বল মুখ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। কোনোরকমে আমতা আমতা করে বললেন,

‘এসো। দুই মিনিটের ভেতর আমি আসছি’
আচ্ছা’, বলে বাইরে দাঁড়িয়ে রইলাম।

ভীষণ অস্বস্তি লাগছে। আমি বুঝতে পারছিনা ভেতরে যাওয়া ঠিক হবে কি না। সামথিং ইজ ফিশি আউট দেয়ার। আমি কি ভেতরে ঢুকবো? নাকি চলে যাবো? ভদ্রলোককে আমার ভালো লাগছে না। আমার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা হলো । একবার মনে হলো অশোককে ফোন দেই । অশোক কি আসবে? উলটা যদি আরও ঝামেলা করে? 

 ছাইপাশ ভেবে অশোককে ফোন দেওয়া হয়নি । বেশিক্ষণ চিন্তাভাবনা না করে এক দৌড়ে আমি চলে এলাম।

আমার প্রেমিক আর্টিফিশিয়াল লিম্বে স্যুটেড ব্যুটেড হয়ে দুই মিনিট শেষ হবার আগেই দরজায় ফেরত আসলেন। তাকে আগের চেয়েও হ্যান্ডসাম দেখাচ্ছে। গোলাপি ফিনফিনে শাড়ি পড়া মেয়েটাকে তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না…

Tags

32 Responses

  1. Keep up the fantastic work! Kalorifer Sobası odun, kömür, pelet gibi yakıtlarla çalışan ve ısıtma işlevi gören bir soba türüdür. Kalorifer Sobası içindeki yakıtın yanmasıyla oluşan ısıyı doğrudan çevresine yayar ve aynı zamanda suyun ısınmasını sağlar.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *